রোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া

পবিত্র রমজান মাস ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও বরকতময় একটি মাস। এটি হিজরি ক্যালেন্ডারের নবম মাস, যখন মুসলমানরা সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত রোজা রাখেন। রোজা আত্মসংযম, ইবাদত ও আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের অন্যতম মাধ্যম।

এই মাসে কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে বলে এটি আরও বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ। মুসলমানরা বেশি বেশি নামাজ, কুরআন তিলাওয়াত, দোয়া ও দান-সদকা করে থাকেন। শবে কদর, যা এক হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ, এ মাসেই অবস্থিত।

রমজান আত্মশুদ্ধি, ধৈর্য, সহমর্মিতা ও তাকওয়া অর্জনের শিক্ষা দেয়। মাসজুড়ে সেহরি ও ইফতারের মাধ্যমে মুসলিম সম্প্রদায় একত্রিত হয় এবং ঈদুল ফিতরের মাধ্যমে মাসটি আনন্দের সঙ্গে সমাপ্ত হয়।

পবিত্র মাহে রমজানের চাঁদ দেখা গেছে। আগামীকাল রোজ রোববার (২ মার্চ) থেকে রোজা রাখবেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। রমজান মাসজুড়ে ইবাদতে মশগুল থাকবেন তারা। রোজার সময় সেহরি ও ইফতার রোজাদারদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

ইসলামের নিয়মানুযায়ী রমজানে প্রতিটি সুস্থ-সবল মানুষের জন্য রোজা রাখা বাধ্যতামূলক। তাই ফজরের আগে সেহরি খাওয়ার মাধ্যমে রোজা শুরু করতে হয় এবং সন্ধ্যায় ইফতারের মাধ্যমে দিনের রোজার সমাপ্তি ঘটে। এই দুটি সময়ে কিন্তু নিয়ত এবং দোয়া করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অর্থাৎ, সেহরি খাওয়ার পর রোজা রাখার নিয়ত করতে হয়, আবার ইফতারের আগে দোয়া করে ইফতার শুরু করতে হয়।

রোজার আরবি নিয়তঃ

نَوَيْتُ اَنْ اُصُوْمَ غَدًا مِّنْ شَهْرِ رَمْضَانَ الْمُبَارَكِ فَرْضَا لَكَ يَا اللهُ فَتَقَبَّل مِنِّى اِنَّكَ اَنْتَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْم

রোজার নিয়তের বাংলা উচ্চারণঃ

নাওয়াইতু আন আছুমা গাদাম, মিন শাহরি রমাদানাল মুবারাক; ফারদাল্লাকা ইয়া আল্লাহু, ফাতাকাব্বাল মিন্নি ইন্নিকা আনতাস সামিউল আলিম।

অর্থঃ হে আল্লাহ! আমি আগামীকাল পবিত্র রমজানের তোমার পক্ষ থেকে নির্ধারিত ফরজ রোজা রাখার ইচ্ছা পোষণ (নিয়ত) করলাম। অতএব তুমি আমার পক্ষ থেকে (আমার রোজা তথা পানাহার থেকে বিরত থাকাকে) কবুল করো, নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞানী।

ইফতার হলো ইসলাম ধর্মের অনুসারীদের জন্য রোজা ভাঙার বিশেষ সময় ও খাবারের নাম। এটি প্রতিদিন সূর্যাস্তের পর গ্রহণ করা হয়, যা সাধারণত খেজুর ও পানি দিয়ে শুরু হয়, অনুসরণে থাকে বিভিন্ন সুস্বাদু খাবার ও পানীয়।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইফতারের খাবার বৈচিত্র্যময় হয়। বাংলাদেশে ইফতারে সাধারণত ছোলা, পেঁয়াজু, বেগুনি, সমুচা, হালিম, শরবত ইত্যাদি জনপ্রিয়। মধ্যপ্রাচ্যে খেজুর, সূপ, গ্রিলড মাংস ও রুটি খাওয়া হয়।

ইফতার কেবল খাবারের সময় নয়, এটি পরিবারের সঙ্গে মিলিত হওয়ার, দান-সদকা করার ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশেরও সময়। এটি মুসলমানদের জন্য আত্মসংযম ও সংযমের শিক্ষা বহন করে, যা রমজানের অন্যতম মূল শিক্ষা।

ইফতারের দোয়াঃ

بسم الله اَللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَ عَلَى رِزْقِكَ اَفْطَرْتُ

বাংলা উচ্চারণঃ

আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়া আলা রিযক্বিকা ওয়া আফতারতু বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন।অর্থ : হে আল্লাহ! আমি তোমারই সন্তুষ্টির জন্য রোজা রেখেছি এবং তোমারই দেয়া রিজিকের মাধ্যমে ইফতার করছি। (মুআজ ইবনে জাহরা থেকে বর্ণিত, আবু দাউদ, হাদিস : ২৩৫৮)

শেয়ার করুন:

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *